প্রেম, জীবনদর্শন ও আধ্যাত্মিকতা নিয়ে রুমির বিখ্যাত কিছু উক্তি
রুমির বিখ্যাত কিছু উক্তি
পারস্যের কবি মওলানা জালালউদ্দিন মুহাম্মদ রুমি তাঁর আধ্যাত্মিক , প্রেম , মরমিয়া ও অতীন্দ্রিয়বাদী রচনার জন্য দেশ- কালের সীমনা ছাড়িয়ে আজও প্রতিটি পাঠক হৃদয়কে মুগ্ধ করে রেখেছেন। তিনি সকলের প্রিয় রুমি নামেই পরিচিত । তার লেখা ‘মসনবী ‘কাব্যগ্রন্থ ফারসি ভাষায় লেখা হলেও বিশ্বের প্রায় সব ভাষাতেই অনূদিত হয় । ১২০৭ সালে জন্ম হলেও আজও তিনি সমান জনপ্রিয় । তিনি সুফিবাদ নিয়ে অনেক কাজ ও চিন্তা-ভাবনা করে গেছেন , তাই তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমেই আজও আমাদের মধ্যে বেঁচে রয়েছেন । বন্ধুরা , আজ তোমাদের জন্য রইল রুমির লেখা জীবন দর্শন , আধ্যাত্মিকতা , প্রেম-ভালোবাসা ইত্যাদি বিষয়ক কিছু উক্তি ।
জীবনদর্শন নিয়ে রুমির উক্তি :-
১. ” যত বেশি নীরব হবে তত বেশি শুনতে পাবে। “
২. ” জন্ম হয়েছে তোমার পাখা নিয়ে। উড়বার ক্ষমতা তোমার আছে তারপরেও খোঁড়া হয়ে আছো কেন ! “
৩. ” যদি আলো থাকে তোমার হৃদয়ে তাহলে ঘরে ফেরার পথ তুমি অবশ্যই খুঁজে পাবে। “
৪. ” মোমবাতি হওয়া সহজ কোন কাজ নয়। আলো দেয়ার জন্য প্রথমে নিজেকেই পুড়তে হয়। “
৫. ” যে মুহূর্তে তুমি তোমার সকল বাধা বিপত্তিকে স্বীকার করে নেবে , তখন থেকেই গুপ্তদ্বার তোমার জন্য উম্মুক্ত হয়ে যাবে ! “
আরও পড়ুনঃ রেনেসাঁ মানব লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির জীবনী, বিখ্যাত চিত্রকর্ম ও উক্তিসমূহ
৬. ” নতুন পথে যাত্রার প্রারম্ভে এমন কারো উপদেশ গ্রহণ করোনা , যে কোনদিন ঘরের বাইরে পদার্পণ করেনি। “
৭. ” গতকাল আমি চতুর ছিলাম। তাই, আমি পৃথিবীটাকে বদলে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমি জ্ঞানী। তাই ,নিজেকে বদলে ফেলতে চাই। “
৮. ” একাকী বোধ করো না , কারণ সমগ্র ব্রহ্মান্ড তোমার ভিতরেই বিদ্যমান। “
৯. ” সুন্দর ও উত্তম দিন তোমার কাছে আসবে না ; বরং তোমারই এমন দিনের প্রতি অগ্রসর হওয়া উচিত। “
১০. ” যেটা হয়নি সেটা নিয়ে দুঃখ করো না। কিছু ঘটনা ঘটে অনাগত দুর্যোগকে থামিয়ে দেবার জন্য। “
প্রেম, জীবনদর্শন ও আধ্যাত্মিকতা নিয়ে রুমির বিখ্যাত কিছু উক্তি
১১. ” এই হচ্ছে পথ…এবং তোমার একার। অন্যেরা হয়তো তোমার সঙ্গে হাঁটবে। কিন্তু কেউই তোমার জন্য হাঁটবে না। “
১২. ” সবশেষে আমরা সবাই একদিন মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করবো , কিন্তু জীবনে চলার পথে সাবধান থাকবে , যেন কোন মানুষের হৃদয়ে আঘাত না করো। “
১৩. ” তোমার মনের ইচ্ছার অনুসরণ করতে গিয়ে বিপথে চলে যেও না। “
১৪. ” যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি নিজের ভেতরের আগুন কে খুঁজে না পাবে ,ততক্ষন পর্যন্ত জীবনের বসন্তে পৌঁছতে পারবে না। “
প্রেম ও ভালোবাসা নিয়ে রুমির উক্তি :-
১৫. ” যে হৃদয় ভরপুর প্রেমের আগুনে তার প্রত্যেক কথাই হৃদয়ে ঝড় তোলে। “
১৬. ” ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হৃদয় ঠিক যেন আগুন পাখির মত, যাকে কোনো খাঁচায় বন্দি করা সম্ভব নয়। “
১৭. ” প্রেম কোনো জ্ঞান বা বিজ্ঞান নয়, বই বা কাগজও নয়। অন্যেরা যা বলে তা কখনোই প্রেমের পথ হতে পারে না। “
১৮. ” প্রেম সর্বদাই তৃষ্ণাস্বরূপ ! ইহা সর্বদাই তৃষ্ণার্ত প্রেমিককে অন্বেষণ করে ! প্রেম এবং প্রেমিক এই দুই জিনিস পরস্পরকে রাত ও দিনের মতোই অনুসরণ করে। “
১৯. ” আমি পূর্বে হয়তো প্রেমের বর্ণনা দিয়েছি ,কিন্তু সত্যিকারের যখন প্রেমকে অনুভব করেছি তখন বাকরুদ্ধ হয়েছিলাম। “
২০. ” প্রেমই মুক্তি , প্রেমই শক্তি ,প্রেমই পরিবর্তনের গুপ্তশক্তি ,প্রেমই দিব্য সৌন্দর্যের দর্পন স্বরূপ। “
২১. ” যেখানে মন কেবল সীমানাই দেখতে পায় ,প্রেম সেখানেও গোপন পথ খুঁজে বের করে। “
২২. ” বিদায় শুধু তারাই বলে যারা শুধু চোখ দিয়ে ভালোবাসে , যারা মনে করে চোখের দেখাই হলো একমাত্র ভালোবাসা। যারা আত্মা আর হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে তাদের কাছে বিদায় নেই ,কারণ আত্মা আর হৃদয় থেকে দূরে যাওয়া সম্ভব নয়। “
২৩. ” প্রেম কোনো ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে না… প্রেম অসীম সাগরের মত , যার কোনো প্রারম্ভ বা সমাপ্তি নেই। “
২৪. ” ভালোবাসা অসীম পরমাত্মা থেকে এসেছে এবং চিরকাল এটা অমর হয়েই থাকবে। “
২৫. ” আমি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারী নই। প্রেমই আমার ধর্ম ! প্রত্যেক হৃদয়ই আমার উপাসনালয় ! “
২৬. ” ভালোবাসা হলো সুস্থ থাকার উপায়। ভালোবাসা হলো সবকিছু বদলে দেবার জাদু ভালোবাসা হলো স্বর্গীয় সৌন্দর্য দেখার আয়না। “
২৭. ” ভালোবাসা ছাড়া পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জিনিসও যন্ত্রণাদায়ক মনে হয়। “
২৮. ” ভালোবাসা হল একটা প্রবহমান নদী , তার থেকে কিছু চুমুক জল তুমিও পান করে নাও। “
২৯. ” স্রষ্টার কাছে পৌঁছনোর অজস্র পথ আছে। তার মাঝে আমি প্রেমকে বেছে নিলাম। “
আধ্যাত্মিকতা নিয়ে রুমির উক্তি :-
৩০. “ প্রকৃতপক্ষে আমার আর তোমার আত্মা একই, তুমি আমার মাঝে আছো আর আমি আছি তোমার মাঝে , আমরা একজন আরেকজনের মাঝে পরস্পর লুকিয়ে আছি !“
৩১. ” তুমি কি তোমার আত্মার খোঁজ করছো ? তবে তোমার মনের খাঁচা থেকে অবমুক্ত হও। “
৩২. ” আমি জেনেছি যে প্রত্যেক নশ্বর সৃষ্টিই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে ; তবে এও জেনেছি যে কেবল গুটিকয়েকই জীবনের আস্বাদ গ্রহণ করবে। “
৩৩. ” তোমার ক্ষুদ্র জগৎ থেকে বের হয়ে এসো এবং স্রষ্টার অসীম জগতে প্রবেশ করো। “
৩৪. “ তুমি সাগরে একবিন্দু জল নও। তুমি এক বিন্দু জলে গোটা এক সাগর। “
৩৫. ” যদি তুমি কখনও আধ্যাত্মিক জগতের কোন জ্ঞানীর সাক্ষাৎ পাও , তাহলে তার সাথে নম্র ও বিনয়ীভাবে কথা বল এবং তার কাছ থেকে কিছু শেখার জন্য আগ্রহী হও।